ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

শেয়ারবাজারের স্বৈরাচার শিবলীর নানা অপকর্ম

২০২৪ আগস্ট ০৬ ১০:০০:৪৭
শেয়ারবাজারের স্বৈরাচার শিবলীর নানা অপকর্ম

করোনা মহামারির মতো এক সংকটকালীন সময় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দায়িত্বদেওয়া হয় স্বৈরাচারঅধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। যাকে নিয়োগ দিয়েছিলেনদেশের স্বৈরাচার পলাতক শেখ হাসিনা।দায়িত্ব নেওয়ার পরে তার কিছু পদক্ষেপে শেয়ারবাজারে আশার আলো দেখা দেয়। খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তার নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে শেয়ারবাজার আবারও সেই জায়াগাতেই ফিরে গেছে। যাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির ডলার নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে ঢুকা, গেম্বলারদের প্রশ্রয় দেওয়া, বৈষম্য সৃষ্টি করা, নিজেরা গেম্বলারদের থেকে সুবিধা নেওয়া, বিশ্বের একক দেশ হিসেবে ফ্লোর প্রাইস দিয়ে বাজারকে ধ্বংস করা, রোড শো’র নামে আনন্দ ভ্রমণ করাসহ নানা বিতর্ক রয়েছে।

অনেক দিন ধরেই শেয়ারবাজারের স্বৈরাচার শিবলীর প্রতি বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভ। কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেমন জনগণ কিছু বলতে পারেনি, ঠিক একইভাবে শিবলীর বিরুদ্ধেও বলতে পারেনি বিনিয়োগকারীরা। তবেতার পদত্যাগ নিয়ে এরইমধ্যে আওয়াজ উঠেছে। কিন্তু একটি পক্ষ মনে করছে, উনি যে পরিমাণ অন্যায় করেছেন এবং ঘুষ খেয়েছেন, তাতে করে নিজেই পালিয়ে যাবেন। কারন এরইমধ্যে তার টিকে থাকার ভিত্তি নষ্ট হয়ে গেছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে।

করোনাকালীন সময় ২০২০ সালের মে মাসে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। যিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে গভীর সংকটে থাকা শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়ায়। অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ। যাতে করে মূল্যসূচক ও লেনদেনে ব্যাপক উন্নতি হয়। কিন্তু উন্নতিতে বড় ভূমিকা রাখে গেম্বলাররা। যাদেরকে কমিশন প্রশ্রয় দেয়। ফলে একসময় বিনিয়োগকারীদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে বাধ্য হয়। যাতে বাজারের প্রতি আস্থা হারিয়ে যায় বিনিয়োগকারীদের।

এরই ধারাবাহিকতায় শেয়ারবাজার ছাড়তে শুরু করে বিনিয়োগকারীরা। অথচ শিবলী কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শেয়ারবাজারকে ব্র্যান্ডিং করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচারণা চালিয়েছে। কিন্তু এ থেকে কোন বিনিয়োগ আসেনি। বরং বিদেশীদের লেনদেন এখন তলানিতে।

শিবলী কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার সময় ২০২০ সালের ৩১ মে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বা বেনিফিসিয়ারি হিসাব (বিও) ছিল ২৫ লাখ ৭৮ হাজার। যা গত ৩১ অক্টোবর কমে এসেছে ১৭ লাখ ৬১ হাজারে। অর্থাৎ শিবলী কমিশনের সাড়ে ৩ বছরে শেয়ারবাজার ছেড়েছে ৮ লাখ ১৭ হাজার বা ৩২ শতাংশ বিনিয়োগকারী।

এই কমিশনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে মিলিয়ন ডলার জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যাংক হিসাব থেকে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের অর্থ পাওয়া এবং সম্প্রতি একটি কোম্পানির আইপিওতে অনৈতিক লেনদেন নিয়ে গণমাধ্যমে উঠে আসা অভিযোগ। এছাড়া আবুল খায়ের হিরু নামের গেম্বলারকে সরাসরি প্রশ্রয় দেওয়াও শিবলী কমিশনের অনেক বিতর্কিত কাজ। যেসব কাজ এর আগে শেয়ারবাজারের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি।

সম্প্রতি মিলিয়ন ডলার জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যাংক হিসাব থেকে বিএসইসি চেয়ারম্যান অর্থ পেয়েছেন বলে 'অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট' বা ওসিসিআরপিতে প্রকাশিত জুলকারনাইন সায়ের খানের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ওসিসিআরপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অর্থ লেনদেনের সঙ্গে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের দুই দশকের পুরনো বন্ধু জাভেদ মতিনের নাম উঠে এসেছে যার সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে।

যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত জাভেদ মতিন ২০২০ সালের বড় একটি সময়জুড়ে প্রতারণা করে হংকংভিত্তিক সাপ্লাই চেইন সোর্সিং কোম্পানি মিং গ্লোবাল লিমিটেড থেকে ১৩ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিনিয়োগের ছদ্মবেশে এই অর্থ মোনার্ক হোল্ডিংস আইএনসি নামের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি কোম্পানির দুইটি ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ৮ লাখ ডলার শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে এবং আরেকটি অংশ একটি বাংলাদেশি কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়, যেই কোম্পানির পেছনেও তিনিই আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ওই কোম্পানির ব্যাংক হিসাব থেকে ২ লাখ ৭৮ হাজার ডলার শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। মোনার্ক হোল্ডিংস থেকে আরও প্রায় ৫ লাখ ৬৪ হাজার ডলার জিন বাংলা ফেব্রিকস নামের একটি কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক শিবলী বলেছেন, তিনি একটি বৈধ ইজারা চুক্তির অধীনে অগ্রিম ভাড়া, নিরাপত্তা জামানত এবং অগ্রিম নির্মাণ ব্যয় বাবদ তার ব্যাংক হিসাবে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৯২৪ ডলার নিয়েছেন। তিনি বৈধ চ্যানেলে এই অর্থ পেয়েছেন। তার খারাপ উদ্দেশ্য থেকে থাকলে তিনি কেন এই অর্থ দেশে আনতেন এবং সেটাও বৈধ চ্যানেলে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।

যে শেয়ারবাজারে বন্ডের কোন চাহিদা নাই এবং তারল্য সংকটে ভুগে। সেই বাজারে বেক্সিমকোকে ৩ হাজার কোটি টাকার বন্ড অনুমোদনের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বড় নেতিবাচক ধাক্কা দিয়েছে শিবলী কমিশন। যে গ্রুপের কর্ণধারদের প্রতি শেয়ারবাজারে রয়েছে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা, তাদেরকেই দেওয়া হয়েছে রেকর্ড ৩ হাজার কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ। এর পেছনে নানা নেতিবাচক খবর বাজারে রয়েছে।

দৈনিক যুগান্তরে একটি হোটেল কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে কমিশনের সঙ্গে সমঝোতা এবং প্রভাবশালীদের প্লেসমেন্ট শেয়ার দিয়ে সুযোগ মিলেছে ভয়াবহ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

যুগান্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোটেলটি ২০২০ সালে সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। যা বিএসইসির জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে বলে অনেকেই মনে করছেন। কারণ এ মাধ্যমে বড় ধরনের দর কষাকষির সুযোগ তৈরি হয়। আর এই সুযোগ দক্ষতার সঙ্গেই কাজে লাগায় কমিশন। পরে আইনে ছাড় দিয়ে তাদের বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈষম্য সৃষ্টিতে পিছিয়ে নেই এই কমিশন। কাউকে মন চাইলে শাস্তি দেয়, কাউকে দেয় না। না দেওয়ার পেছনে অবশ্য ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকে। এই কমিশনের কাছে কয়েক মাস আগে ইস্যু ব্যবস্থাপনা কোম্পানির সঙ্গে আত্মীয়দের শেয়ার ধারন থাকার দায়ে বানকো ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বড় অনিয়ম করেছে বলে প্রতিয়মান হয়েছে। যে কারনে কমিশন তাকে শেয়ারবাজারে নিষিদ্ধ এবং তাকেসহ তার আত্মীয়দেরকে রেকর্ড ২৬ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। যে ধরনের অনিয়ম শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রেও হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটির ইস্যু ম্যানেজ করা একমি পেস্টিসাইডসে তেমনটি হয়েছে। তবে এ জন্য শাহজালাল ইক্যুইটিকে কিছু বলা হয়নি।

শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টে চেয়ারম্যান হিসেবে মাহফুজা ইউনুস ও প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস (সর্ম্পক্যে স্বামী-স্ত্রী) জড়িত থাকার পরেও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোম্পানি একমি পেস্টিসাইডসের আইপিওকালীন শেয়ার ধারন করেছে। তবে এখনো শাস্তির আওতায় আসেনি।

কমিশনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের ন্যায় বিদেশীদেরও বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের প্রতি অনাস্থা তৈরী হয়েছে। যদিও কমিশন বিদেশীদেরকে আনতে অনেক দেশে রোড শো করেছে। যা নিয়ে শুরু থেকেই রয়েছে সমালোচনা। কারণ রোড শো থেকে এখন পর্যন্ত কোন সুফল আসেনি। যে রোড শো’কে অনেকেই আনন্দ ভ্রমণ বলে অভিহিত করেন। যেখানে বিদেশীদের থেকে দেশ থেকে যাওয়া সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতি থাকে বেশি।

দেখা গেছে, শিবলী কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের বছরে (২০২০) ১১ মাসে (এপ্রিল মাস বন্ধ ছিল) বিদেশীরা ১০ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকার লেনদেন করে। যেটার পরিমাণ ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে বা ১০ মাসে নেমে এসেছে ১ হাজার ৭৫৩ কোটিতে। অথচ বিদেশীদেরকে আনতে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মান, ফ্রান্স, দুবাই, জাপান, সুইজারল্যান্ড, কাতারের মতো দেশে রোড শো করা হয়েছে।

শিবলী কমিশনের সাড়ে ৩ বছরে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় উঠে আসে গেম্বলার আবুল খায়ের হিরু। যাকে কমিশন সরাসরি প্রশ্রয় দেয়। নানা অনিয়ম করলেও তাকে কিছু বলা হয় না। যে কারনে হিরু একচেটিয়া খেলে যায়। তবে অনেক সমালোচনার মূখে শিবলী কমিশন তাকে সর্বশেষ কয়েকটি কোম্পানির কারসাজিতে জরিমানা করতে বাধ্য হয়েছে। তবে সেটা কারসাজিতে আয়ের তুলনায় খুবই নঘণ্য।

ডিএসই গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ি, হিরু চক্র এনআরবিসি ব্যাংক, ফরচুন সুজ, বিডিকম অনলাইন, ওয়ান ব্যাংক, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স এবং ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের কৃত্রিম দর বৃদ্ধির মাধ্যমে ১৩৪ কোটি ২৪ লাখ টাকার মুনাফা করে। এরমধ্যে রিয়েলাইজড গেইন ৪৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ও আনরিয়েলাইজড গেইন (সিকিউরিটিজ বিক্রি অসম্পন্ন) ৮৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ছিল। এর বিপরীতে কমিশন জরিমানা করেছে ১০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

হিরুর কারসাজি প্রমাণ করার সবকিছুই শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আছে। কোন ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে, কবে, কখন, কীভাবে এবং কার সঙ্গে মিলে কোন শেয়ার নিয়ে কারসাজি করেছেন- সব জানে এ সংস্থা। তার পরও ব্যবস্থা না নেওয়ায় মনে হয়, বিএসইসির আশ্রয়-প্রশ্রয়েই হিরো শেয়ারবাজারে হিরোগিরি করছেন।

২০১৯ সালের নভেম্বরে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স দিয়ে কারসাজি শুরুর পর গত দুই বছরে আরও তিন ডজন শেয়ার নিয়ে বড় ধরনের কারসাজির করেছেন। শেয়ার লেনদেন করতে গিয়ে সব আইন ও বিধিবিধান লঙ্ঘন করেছেন। নিজের স্ত্রী, বাবা, বোন ও নামসর্বস্ব সমবায় সমিতির নামে বিও অ্যাকাউন্ট খুলে শেয়ার কেনাবেচা করেন। সার্কুলার বা সিরিজ ট্রেড করে শেয়ারের দাম বাড়িয়েছেন, যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অধ্যাদেশ ১৯৬৯-এর ১৭(ই) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হয়ে ওই শেয়ার কিনেছেন, তখন হিরো তাঁর সব শেয়ার বিক্রি করে নিজের মুনাফা নিয়ে তুলে নিয়েছেন।

আইনের লঙ্ঘন করে হিরো শেয়ার ব্যবসা করছেন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানার পরও শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সার্ভেল্যান্স বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) হিরো ও তাঁর সিন্ডিকেটের বিষয়ে গত দুই বছরে অন্তত ২০টি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন এবং নিয়মিত সার্ভেল্যান্স প্রতিবেদনে শতাধিকবার তথ্য দিয়েছে। এসব প্রতিবেদন দেখেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিএসইসি। উল্টো এক তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর পর এক চিঠিতেই ডিএসইর সংশ্নিষ্ট বিভাগের তৎকালীন ইনচার্জসহ সবাইকে একযোগে বদলি করার আদেশ দিয়েছে বিএসইসি, যা এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে।

যদিও বিএসইসি আইনের ৮ ধারায় কমিশনের ওপর অর্পিত দায়িত্ব হলো প্রতারণামূলক ও অসাধু শেয়ার ব্যবসা বন্ধ করা। কারসাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে ১৯৬৯ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের ১৭(ই) ধারায় স্পষ্ট করে যা বলা আছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে হিরোর বিরুদ্ধে শুধু কারসাজি নিয়ে প্রশ্ন তোলাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে পারে। অপরাধ প্রমাণ হলে তাঁর সব মুনাফা তো বটেই, এ পথে উপার্জিত সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত, জেল ও জরিমানা সবই হতে পারে।

এই কমিশন বিশ্বের বর্তমানে একমাত্র কমিশন, যারা শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস দিয়ে কৃত্রিমভাবে শেয়ার দর ধরে রেখেছে। যা কোনভাবেই শেয়ারবাজারের সঙ্গে যায় না। এই ফ্লোর প্রাইসের কারনে শেয়ার দর কৃত্রিমভাবে দরে রাখলেও তা কেউ কিনে না। যদি কেউ না কিনে, তাহলে দর ধরে রেখে লাভ কি?- সেটা হয়তো এই কমিশনই জানে। যার সুফল বিশ্বের অন্যকোন কমিশন জানে না।

উল্লেখ্য, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এর ধারা ৫ ও ৬ এর বিধানাবলী প্রতিপালন করতে ২০২০ সালের ১৭ মে শিবলী রুবাইয়াতকে ৪ বছর মেয়াদের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করা হয়।যার মেয়াদগত মে মাসে শেষ হয়। এরপরে তাকে ৪ বছরের জন্য পূণ:নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে