ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অসময়ে দেখা গেলেও সময়ে নাই

২০২৪ এপ্রিল ১৩ ০৭:২১:৩০
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অসময়ে দেখা গেলেও সময়ে নাই

শেয়ারবাজারের অসময়ে দেখা গেলেও প্রয়োজনে নেই মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের আর্বিভাব। ২০০৯-১০ সালে উর্ধ্বমুখী ধারায় থাকাকালীন সময় শেয়ারবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ব্যাপক আগমন লক্ষ করা গেছে। কিন্তু এরপর থেকে বাজার যখন ক্রমানয়ে নিম্নমুখী তথন থেকে কমে গেছে এই খাতটির অনুমোদন। ওইসময় কোন ধরনের যাছাই না করে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

দেখা গেছে, ২০০৯ সালে শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য অনুমোদন পায় ১৮টি প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে ৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। আর ২০১০ সালে অনুমোদন পাওয়া ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮টিই ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ড। যেসময় শেয়ারবাজার ছিল অস্বাভাবিক ধারায় উর্ধ্বমুখী। আর ওইসময় মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অনুমোদনের মাধ্যমে সেই পালে হাওয়া দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে নিম্নধারায় থাকে শেয়ারবাজার। আর তখন থেকে বাজারে আসাও কমে যায় মিউচ্যুয়াল ফান্ড। তথ্যমতে, ২০১২ সালে শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের অনুমোদন পাওয়া ১৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড। আর ২০১৩ সালে সে সংখ্যা ১৬টার মধ্যে ২টা।

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার জন্য আসে মিউচ্যুয়াল ফান্ড। যেখানে একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড মোট ফান্ডের কমপক্ষে ৬০ শতাংশই এই বাজারে বিনিয়োগ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এতে করে যখন এই খাতটির আগমন বেশি হবে তখন শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব বেশি পড়বে এটাই স্বাভাবিক। যার ফলে অস্বাভাবিক উর্ধ্বমুখী ধারায় নয় স্বাভাবিক ধারায় প্রয়োজন মিউচ্যুয়াল ফান্ড। কিন্তু বিএসইসি শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক উত্থানের সময় (২০০৯ ও ১০ সাল) মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বেশি অনুমোদন দিয়েছে।

শেয়ারবাজারে অসময়ে অনুমোদনের কারনে ২০১০ সাল পরবর্তী মহাধ্বসে কবলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতটি। এই খাতটিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা এখনো তার প্রভাব থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।

২০০৯-১০ সালে কোন ধরনের বিচার-বিবেচনা না করে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ। ২০০৯-১২ এমনকি ২০১৩ সালে যেসব মিউচ্যুয়াল ফান্ড শেয়ারবাজারে এসেছে সেগুলো অদক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বর্তমানে ৫-৭ টাকায় পাওয়া যাওয়ায় ১০টাকা দিয়ে কেউ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ক্রয় করবে না বলে জানান ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী। বর্তমানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের এই নাজুক অবস্থার মধ্যে নতুন করে আসলে সাবস্ক্রিপশন পরিপূর্ণ হওয়া নিয়ে তিনি সন্দিহান।

শাকিল রিজভী জানান, বাজারের উর্ধ্বমুখী ধারায় মিউচ্যুয়াল ফান্ড আসায় সমস্যা নাই। তবে এর অর্থ এই না যে, হাই রেটে শেয়ার ক্রয় করবে। ২০০৯-১০ সালে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো হাই রেটে শেয়ার ক্রয় করে অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। যার কারনে বর্তমানে সেসব মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বেহাল দশার কারনে নতুন করে কোন ফান্ড আসছে না। আর বিনিয়োগকারীরাও এই খাতটির উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আবেদন কম হওয়ার কারনে পূর্বের চেয়ে বর্তমানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অনুমোদন কম। মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে বাজারে আনার দায়িত্ব এ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানির। তারা যদি প্রোপার ওয়েতে একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে বাজারে আনার জন্য আবেদন করে, তাহলে অবশ্যই অনুমোদন দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সবকিছু ঠিক থাকলে অনুমোদন না দেওয়ার কিছু নাই বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে