ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

দেশের দ্বিতীয় পরিবেশবান্ধব শিপইয়ার্ডে নতুন জাহাজ

২০২৩ জুন ২৬ ০৮:৫৬:৫২
দেশের দ্বিতীয় পরিবেশবান্ধব শিপইয়ার্ডে নতুন জাহাজ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এস এন করপোরেশন নামের গ্রিন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে প্রথমবারের মতো একটি পরিবেশবান্ধব স্ক্র্যাপ জাহাজ ভিড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি এইচ লাইন শিপিংয়ের জাহাজটির নাম এমভি এইচ পাওয়ার। জাহাজটি ২২ জুন ইয়ার্ডটিতে আনা হয়। এখন কাটার অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকার এস এন করপোরেশন দেশের দ্বিতীয় গ্রিন শিপইয়ার্ড (পরিবেশবান্ধব জাহাজভাঙা কারখানা)। মাসখানেক আগে ‘ক্লাস এন কে’ নামে জাপানের একটি আন্তর্জাতিক মান সনদ প্রদানকারী সংস্থা থেকে গ্রিন ইয়ার্ডের স্বীকৃতি লাভ করে। এর আগে ২০১৭ সালে দেশের প্রথম গ্রিন জাহাজভাঙা কারখানার স্বীকৃতি অর্জন করেছিল পিএইচপি শিপব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইয়ার্ড।

গ্রিন ইয়ার্ডের স্বীকৃতি লাভের পর এস এন করপোরেশনে এই প্রথম কোনো জাহাজ ভিড়েছে। এই বাল্ক জাহাজটির ওজন ১৮ হাজার ২৩৯ মেট্রিক টন। ১৯৯৮ সালে এই জাহাজ নির্মাণ করা হয়েছিল।

এস এন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বরকত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমবারের মতো তাঁদের ইয়ার্ডে একটি গ্রিন জাহাজ আনা হয়েছে। এই জাহাজ কাটার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

হংকং কনভেনশন অনুযায়ী একটি গ্রিন ইয়ার্ডকে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা (আইএমও) নির্দেশিত পরিবেশসম্মত ও নিরাপদভাবে জাহাজ কাটার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। হংকং কনভেনশনের আলোকে সব কটি জাহাজভাঙা কারখানাকে গ্রিন ইয়ার্ডে পরিণত করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

জাহাজভাঙা কারখানায় শ্রম নিরাপত্তা ও পরিবেশসম্মত কার্যক্রম নিশ্চিত করার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসা। জানতে চাইলে ইপসার সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী বলেন, হংকং কনভেনশনের আলোকে ইয়ার্ডগুলোকে গ্রিন করার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এটা ইতিবাচক দিক। এতে করে দুর্ঘটনা রোধের পাশাপাশি পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে।

এস এন করপোরেশন ১৯৯৫ সাল থেকে জাহাজভাঙা কারখানা চালু করে। স্ক্র্যাপ জাহাজ ভেঙে প্রতিষ্ঠানটি বছরে প্রায় এক লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করতে সক্ষম। ১৩ একর আয়তনের এই কারখানায় বর্তমানে ৩০০ শ্রমিক কাজ করছেন।

১৯৮০ দশকে গড়ে ওঠা জাহাজভাঙা খাতকে ২০১১ সালে শিল্প ঘোষণা করা হয়। একসময় সীতাকুণ্ডে প্রায় ১৫০টি শিপইয়ার্ড কারখানা গড়ে ওঠে। বর্তমানে মাত্র ২৫টির মতো ইয়ার্ড চালু আছে। জাহাজভাঙা কারখানার বিরুদ্ধে পরিবেশ ধ্বংস এবং শ্রম নিরাপত্তার অভাব শুরু থেকেই ছিল। জাহাজ কাটতে গিয়ে প্রতিবছর বেশ কিছু শ্রমিক প্রাণ হারান। এ ছাড়া সমুদ্র ও পরিবেশদূষণের ঘটনাও ঘটে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর জাহাজভাঙা কারখানায় দুর্ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া গত বছর ১০ জন, ২০২১ সালে ১৪ জন, ২০২০ সালে ১১ জন ও ২০১৯ সালে ২০ জনের মৃত্যু হয়।

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে