ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

ডিএসইর সব খবর গোপনে বিএসইসিতে পাঁচার করেন বাশার : দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

২০২৩ জুলাই ১০ ০৯:৪৪:২৬
ডিএসইর সব খবর গোপনে বিএসইসিতে পাঁচার করেন বাশার : দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

স্টক সংবাদ প্রতিবেদক :দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা (সিআরও) কয়েক লাখ টাকার বেতনাদিসহ অন্যান্য সুবিধা নিচ্ছেন খাইরুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ। তবে তিনি অনেকটা ডিএসইতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যাতে করে ডিএসইর একটি বড় অংশ তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে তার দ্বন্ধ হয়েছে।

সম্প্রতি শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার দেওয়া একটি চিঠির জবাব দেওয়ার ইস্যুতে তাঁরা দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন। বেশ কয়েক দফায় ই-মেইল এবং পাল্টা ই-মেইলের মাধ্যমে ডিএসইর এই দুই কর্মকর্তার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়েছে। এ নিয়ে ডিএসইর ম্যানেজমেন্টের সব কর্মকর্তাই প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

ডিএসইর এক কর্মকর্তা স্টক সংবাদকে বলেন, সিআরও ডিএসইর হলেও কাজ করেন বিএসইসির হয়ে। ডিএসইতে যাই ঘটে, তিনি গোপনে বিএসইসিকে জানিয়ে দেন। অনেকটা বিএসইসির প্রতিনিধি হিসেবে ডিএসইতে কাজ করছেন খায়রুল বাশার। এর মাধ্যমে তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বন্দ তৈরী করছেন। যা কোনভাবেই কাম্য না।

সম্প্রতি ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর প্রতিবেদন দাখিল সংক্রান্ত বিষয়ে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই ও সিএসই) অবস্থান ব্যখ্যা করতে বলেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আর বিএসইসির চিঠির জবাব কে দেবে তা নিয়েই দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার ও প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা খাইরুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ। এ দুই কর্মকর্তার কেউই ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর অবস্থানের ব্যখ্যা বিষয়ে দায়িত্ব নিতে চান না। একজন অপরজনের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন।

এদিকে বিএসইসির চিঠির বিষয়ে ডিএসইর মার্কেট অপারেশন বিভাগ থেকে সংস্থাটির ব্যবস্থাপক স্নেহাশিষ চক্রবর্তীর কাছে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। মার্কেট অপারেশন বিভাগের প্রধান মো. জলিলুর রহমান সাক্ষরিত একটি চিঠি রবিবার (৯ জুলাই) স্নেহাশিষ চক্রবর্তীর কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে আগামীকালের (সোমবার) মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য মার্কেট অপারেশন বিভাগকে জানাতে বলা হয়।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসির জারি করা নির্দেশনার ৭ নম্বর শর্ত অনুযায়ী, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে লেনদেন করা তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সব পর্যায়ের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করার বাধ্যবাধকতা আছে। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে বিএসইসির কাছে প্রতিবেদন পাঠানোর শর্তও রয়েছে।

এছাড়াও বিএসইসির নির্দেশনা অনুসারে, ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা কমিশনের অনুমোদন ছাড়া কোনো ধরনের ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর ও বন্ধকি দিতে পারবেন না। ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে পর্ষদ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কমিশন এক বা একাধিক স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেবে। পর্ষদ পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হলে বর্তমান পরিচালক ও উদ্যোক্তারা অন্য কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী কোনো কোম্পানির পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন না।

২০২০ সালে বিএসইসির ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘জেড’ ক্যাটাগরির সব কোম্পানি ছয় মাসের মধ্যে এজিএম বা ইজিএম আয়োজন করবে। পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ চার বছরের মধ্যে কোম্পানির সার্বিক অবস্থার উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হলে স্টক এক্সচেঞ্জ সেই কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করাসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে